র্যাবের ব্রিফিং
ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে কাঠমান্ডুগামী বিমানে ‘বোমা আতঙ্ক’!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০১:৫২ পিএম

র্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা রয়েছে, এমন গুজব ছড়িয়ে ১৪২ যাত্রী ও ৭ ক্রুর প্রাণের ঝুঁকি তৈরি করেছিলেন এক মা। ছেলে যেন পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে নেপাল যেতে না পারে, এই উদ্দেশে তিনি এ কাজ করেছিলেন।
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান।
র্যাব জানিয়েছে, পারিবারিক বিষয় থেকে উদ্ভূত এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ডিজি বলেন, এ ধরনের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুনাম ও দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়। অতীতে এ ধরনের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। তবে প্রতিবারই বোমা থাকার খবর মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
আরো পড়ুন : হাসিনার প্রত্যার্পণ ইস্যুতে ভারতের অবস্থান অনড়
তিনি জানান, ফোনকলের সূত্র ধরে রাতভর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মূলত পারিবারিক কলহই এর নেপথ্যে।
র্যাব ডিজি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও গর্হিত কাজ। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা এবং যাত্রীদের ভয়ভীতি ছড়ানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপচেষ্টা করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাব জানায়, ইমন নামে এক ব্যক্তি পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পারেন ইমনের স্ত্রী ও মা। ছেলেকে যাত্রা থেকে ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে ইমনের বন্ধু ইমরানের পরামর্শে বোমার গুজব ছড়ানোর ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নেন ইমনের মা। পরিকল্পনা মতো তিনিই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে জানান, ফ্লাইটটিতে বোমা রয়েছে।
১১ জুলাই বিকেলে বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। উড়োজাহাজটি ট্যাক্সিও করতে শুরু করেছিল। এমন সময় একটি অচেনা নম্বর থেকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন আসে— বিমানে নাকি বোমা রয়েছে!
ফোনকলের পরপরই ফ্লাইটটি স্থগিত করা হয়। বিমান বাহিনীর টাস্ক ফোর্স, এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক), বিমান বাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড এবং র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল যৌথভাবে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উড়োজাহাজ এবং যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশি করে।
যাত্রীদের নিরাপদে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে স্ক্রিনিং শেষে লাউঞ্জে পাঠানো হয়। রাত ৭টা ৫৮ মিনিটে তল্লাশি শেষ হয়। কোথাও কোনো বোমা বা সন্দেহজনক বস্তু মেলেনি।