স্বৈরাচারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা শুনলে ভয় পায়: আমিনুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১১:৪১ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
স্বৈরাচারের মতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা শুনলে তাদেরও ভয় লাগে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। রবিবার (২৫ মে) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জিয়া আন্তঃথানা ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর দুটি খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় আমিনুল হক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা জানি না, কেন আপনাদের ভয় লাগে? কিসের ভয় আপনাদের? এদেশের সাধারণ মানুষ এবং বিএনপির প্রত্যকটি নেতাকর্মী আপনাদেরকে সমর্থন দিয়েছে। দ্রুত সময়ের ভিতর আপনারা একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিবেন। কিন্তু নির্বাচনের কথা শুনলেই কেনো জানি আপনাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। সংষ্কার ও বিচারের কথা বলে এবং নতুন নতুন অজুহাত সামনে দাঁড় করিয়ে দেন।
নির্বাচন দিতে সমস্যা কোথায় অর্ন্তবর্তী সরকারকে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, নির্বাচন দিতে আপনাদের সমস্যা কোথায়? এদেশের মানুষ আপনাদের কাছে জানতে চায়। আমরাও জানতে চাই।
নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে আমিনুল হক বলেন, নির্বাচন হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এদেশের জনগণের মতামতের একটি প্রক্রিয়া। আমরা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করি। বিএনপি সবসময় গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছে। এদেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলেছে। সেই সাধারণ মানুষের যে প্রত্যশা গত ১৫ বছর যারা নতুন করে ভোটার হয়েছেন এবং এদেশের মানুষ- যারা ভোট দিতে পারে নাই। কিভাবে ভোট দিতে হয় তাও তারা জানে না। সেই মানুষ গুলো তারা ভোট দেয়ার জন্য অপেক্ষা রয়েছে। কিন্তু অন্তবর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা কিছু ষড়যন্ত্রকারী কিছু গণমাধ্যমের ষড়যন্ত্রকারীরা তারা ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে।
দেশে কিছু হলেই বিএনপির ওপরে দোষ চাপিয়ে দেয় একটি গোষ্ঠী মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশে কিছু হলেই- ভালো হউক আর মন্দ হউক- বিএনপির দোষ বলে একটি গোষ্ঠী চালিয়ে দেয়। বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে। এদেশের জনগণের যে প্রত্যাশা-সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য কাজ করে।
রাষ্ট্রীয় সংষ্কারের জন্য ৩১ দফার গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি বলেন, বিএনপি এদেশের সাধারন মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলছে। বিএনপির ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মপরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলেই বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পরিপূর্ণভাবে সংষ্কার করা সম্ভব হবে।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় - তারা আর কোনো বিশৃঙ্খলা এবং কোনো রাজনৈতিক হিংসা দেখতে চায় না। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ভবিষ্যতে আমরা একটি সুস্থ স্বচ্ছ নিরপেক্ষ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে চাই। যেখানে কোনো হানাহানি থাকবে না - কোনো বিশৃঙ্খলা থাকবে না। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আমরা একসাথে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে চাই।
এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, আফাজ উদ্দিন, হাজী মো. ইউসুফ, মো. শাহ আলম, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকায় ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৪ আগষ্টে মেরুদণ্ডের হাড়ে গুলিবিদ্ধ ফাহিম হাসানকে দেখতে যান ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক। সন্ধ্যায় মিরপুরের রূপনগর আবাসিক কমিউনিটি সেন্টারে রূপনগর প্রেসক্লাবের ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
রূপনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মিরপুর সম্মিলিত সাংবাদিক জোটের সাধারণ সম্পাদক এস এম জহিরুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মজিবর রহমান তুহিন, রূপনগর আবাসিক বাড়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিএনপি নেতা মো. শাহ আলম মোল্লা প্রমুখ।