পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নেমে আসছে শীতের আমেজ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশা কিছুটা কমলেও উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে জেলাজুড়ে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার। গত কয়েক দিনের তুলনায় কুয়াশা কিছুটা হালকা হলেও সকাল থেকেই বইছে ঠান্ডা বাতাস। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে দেখা মেলে রোদের, এতে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য বাড়ছে।

আরো পড়ুন : নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে যে বার্তা দিলেন অর্থ উপদেষ্টা

বুধবার বিকেলে তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত বেশ ঠান্ডা অনুভব করছেন স্থানীয়রা।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, উত্তর দিক থেকে হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করায় তাপমাত্রা ক্রমেই কমছে। আগামী দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে শৈত্যপ্রবাহও দেখা দিতে পারে।

তিনি আরো বলেন, দিনে সূর্যের তেজ থাকলেও রাতে দ্রুত তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে। এতে দিন ও রাতের পার্থক্য বাড়ায় সকাল-সন্ধ্যায় ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে।

সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, হালকা কুয়াশার মধ্যে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল তুলনামূলক কম। কেউ জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েছেন, আবার কেউ শরীর গরম রাখতে হাঁটতে বের হয়েছেন।

সদরের চাকলাহাট এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, রাত থেকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। সকালে ধান কাটতে গিয়ে হাত জমে যাচ্ছিল, রোদ উঠলে কিছুটা স্বস্তি পাই।

একই এলাকার শিক্ষার্থী লাকী আক্তার জানান, সকালে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল, গরম কাপড় পরে বের হয়েছি। কুয়াশা কম থাকলেও বাতাসে বেশ ঠান্ডা।

গলেহাহাটের দিনমজুর নুর ইসলাম বলেন, এই ক’দিন ধরেই সকাল-বিকেল ঠান্ডা পড়ছে। রোদে কাজ করা ভালো লাগে, কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়।

এদিকে, শীতের আগমনী বার্তায় অনেকেই গরম কাপড় বের করে ব্যবহার শুরু করেছেন। হাটবাজারে কম্বল, সোয়েটার, মাফলারসহ শীতবস্ত্র বিক্রি বেড়েছে। শহরের দোকান ও অফিসে গরম পানীয়র চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

তালমা এলাকার বাসিন্দা ফাহিম ইসলাম বলেন, এই সময়টায় কাজ করতে কষ্ট হয়, তবে এটাই পঞ্চগড়ের সৌন্দর্য—ঠান্ডা হাওয়া আর কুয়াশার সকাল।