শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা ফেরালো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। ফলে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিল না টাইগারদের। এমন সমীকরণ নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করেছিল লিটন বাহিনী। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯৪ রানে গুটিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। তাতে ৮৩ রানের বিশাল জয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরলো সফরকারীরা।
রোববার (১৩ জুলাই) ডাম্বুলায় প্রথম ওভারে ৮ নিয়ে রান তাড়া শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু হোঁচট খায় পরের ওভারেই। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে পয়েন্ট থেকে শামীমের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়েছেন ৮ বলে ৫ রান করা মেন্ডিস। শরিফুলের করা পরের ওভারে রিশাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে গেছেন ৪ বলে শূন্য রান করা কুশল পেরেরা। তৃতীয় উইকেটের জন্যও বাংলাদেশের অপেক্ষা করতে হলো না বেশিক্ষণ। মুস্তাফিজের করা আগের ওভারেই আভিস্কা ফার্নান্দোর ক্যাচ ছাড়েন পারভেজ। ওই মূল্য বাংলাদেশকে খুব বেশি চোকাতে হয়নি, শরিফুলের পরের ওভারে স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো শামীম ক্যাচ নিয়েছেন আভিস্কার। তখর শ্রীলঙ্কার রান ২৫।
এরপর পাওয়ার প্লের শেষ ওভার করতে আসা সাইফউদ্দিনের প্রথম বলে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ইয়র্কার লেন্থের বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন আসালাঙ্কা। কিন্তু বল যায় উইকেটের পেছনে। লিটন দাস ও সাইফউদ্দিন আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। এগিয়ে এসে লিটনকে রিভিউ নিতে বলেন মিরাজ। রিপ্লেতে দেখা যায়, সাইফউদ্দিনের বল আসালাঙ্কার ব্যাট ছুঁয়েই বল গেছে লিটনের হাতে। ৩০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে যায় লঙ্কানরা। এরপর নিয়মিতে বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে শ্রীলঙ্কা, শেষ পর্যন্ত ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। তাতে ৮৩ রানের জয় পায় লিটন দাসের দল। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়ে থাকে রিশাদ হোসেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ৭ রানের মধ্যে দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান তামিম সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে যায় টাইগাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে থুসারার বল খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ইমন। ব্যাট ও প্যাডের মাঝখান দিয়ে ঢুকে বল ভেঙে দেয় স্টাম্প। তিন বল খেললেও কোনো রান করতে পারেননি তিনি। এরপর দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আউট হন তানজিদ তামিম। বিনুরা ফার্নান্দোর গুড লেন্থের একটি বল অফ-সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কোণায় লেগে বল ওঠে যায় উপরে, আর সেটি সহজেই তালুবন্দী করেন কাসুন পেরেরা। আট বল খেলে পাঁচ রান করেন তামিম।
শুরুতে দুই উইকেট হারালেও তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয় দলকে আবার পথ দেখান। ৫৫ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন তারা। হৃদয় ২৫ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রান করে বিদায় নেন বিনুরা ফার্নান্দোর বলে পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়ে। হৃদয়ের বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজ ক্রিজে এসে বেশি সময় টিকতে পারেননি। বিনুরার ওভারের চতুর্থ বলে থুসারার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মাত্র ১ রান করে। এরপর ছয়ে নামা শামীম হোসেন লিটনের সঙ্গে জুটি গড়ে দলের স্কোর দ্রুত বাড়ান। মাত্র ৩৯ বলে এই জুটি তোলে ৭৮ রান। লিটন তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক। ৫০ বলে ১ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই আউট হন তিনি।
লিটনের বিদায়ের পর দায়িত্ব নেন শামীম। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতকের পথে ছিলেন তিনি। শেষ ওভারে দুই রানআউট বাংলাদেশকে কিছুটা পিছিয়ে দেয়। তৃতীয় বলে জাকের আলী (৩) এবং পরের বলেই রানআউট হয়ে যান শামীম। আউট হওয়ার আগে ২৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। শ্রীলঙ্কার হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন বিনুরা ফার্নান্দো।