সিরীয়ায় সেনাবাহিনী-এসডিএফের মধ্যে সংঘর্ষ, হতাহত ১৩
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ এএম
ছবি : সংগৃহীত
সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে সিরীয় সেনাবাহিনী ও কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) শেইখান ও লায়রমুন গোলচত্বর এলাকায় এই সংঘর্ষ ঘটে বলে আলজাজিরাকে জানিয়েছে একটি মেডিকেল সূত্র।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানায়, সংঘর্ষ চলাকালে গোলাগুলির মধ্যে বহু পরিবার ও স্থানীয় শ্রমিক নিরাপত্তার আশঙ্কায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। আলজাজিরার দামেস্ক প্রতিনিধি আয়মান ওঘান্না জানান, সংঘর্ষে ভারি মেশিনগান ও মর্টার শেলের ব্যবহার হয়েছে এবং এর ফলে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এসডিএফের গুলিতে তাদের দুজন উদ্ধারকর্মী আহত হয়েছেন। পাশাপাশি শেইখান গোলচত্বরে এসডিএফের গুলিতে দুই শিশুও আহত হয়।
আরো পড়ুন : সাগরের তলায় এশিয়ার বৃহত্তম স্বর্ণের খনির সন্ধান পেল চীন
এসডিএফকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংঘর্ষে সিরিয়ার দুই নিরাপত্তা সদস্য আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন সেনা সদস্য। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আলেপ্পোর শেখ মাকসুদ ও আশরাফিয়াহ এলাকায় মোতায়েন থাকা যৌথ চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনরত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায় এসডিএফ বাহিনী।
তবে এসডিএফ বেসামরিক এলাকায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর সোমবার গভীর রাতে উভয় পক্ষ গোলাবর্ষণ বন্ধে সম্মত হয়। সানা জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে সিরীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ হামলা বন্ধের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে এসডিএফও জানায়, তাদের বাহিনীকে পালটা জবাব বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই সংঘর্ষ এমন এক সময় ঘটল, যখন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান দামেস্ক সফরে সিরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে এসডিএফকে নতুন সিরীয় সেনাবাহিনীতে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। গত মার্চে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এসডিএফকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত করার একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়া ও তুরস্কের উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠকই সোমবারের সংঘর্ষের ‘অনুঘটক’ হিসেবে কাজ করেছে। এর আগে দামেস্ক প্রস্তাব দিয়েছিল, প্রায় ৫০ হাজার এসডিএফ যোদ্ধাকে তিনটি ডিভিশনে একীভূত করা হবে। তবে তুরস্ক এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এসডিএফের বিদ্যমান কমান্ড কাঠামো ভেঙে দেওয়ার দাবি জানায়।
২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এসডিএফ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসডিএফকে সিরীয় বাহিনীতে একীভূত করার বিষয়টি বর্তমানে সিরিয়ার জাতীয় ঐক্যের জন্য সবচেয়ে স্পর্শকাতর ইস্যুগুলোর একটি। অন্যদিকে তুরস্ক এসডিএফকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবেও বিবেচনা করে।
