থাইল্যান্ডে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে টানা বর্ষণে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ায় ত্রাণ ও জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছাতে বিমানবাহী রণতরী প্রস্তুত রেখেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, প্রভাবিত এলাকায় আরো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্যার কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দক্ষিণাঞ্চলের একটি হাসপাতাল থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সরিয়ে নিতে হেলিকপ্টার পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের নয়টি প্রদেশ এবং প্রতিবেশী মালয়েশিয়ার আটটি প্রদেশ প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই দেশের প্রায় ৪৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে চলতি সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ৮ থেকে ১৩ জন এবং মালয়েশিয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর হ্যাট ইয়াইয়ের এক জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, নগরীর একটি প্রধান সরকারি হাসপাতালের প্রথম তলা পানিতে ডুবে গেছে। এখানে ভর্তি ৬০০ রোগীর মধ্যে প্রায় ৫০ জন আইসিইউতে আছেন। হেলিকপ্টারে খাবার সরবরাহ করার পাশাপাশি গুরুতর রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সোমরেক চুংসামান বলেন, ‘হ্যাট ইয়াই হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা সব রোগীকে বুধবারই সরিয়ে নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন : বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু যেদিন থেকে
সরকারের মুখপাত্র সিরিপং আংকাসাকুলকিয়াত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হ্যাট ইয়াইতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় প্রায় ২০টি হেলিকপ্টার ও ২০০ নৌযান মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
সোমরেক জানান, রোগী, স্বজন ও চিকিৎসাকর্মীসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ এখনো হাসপাতালে অবস্থান করছেন। পানি কমলে নৌকায় করে খাবার পাঠানো হবে।
গত সপ্তাহে হ্যাট ইয়াইতে একদিনে ৩৩৫ মিলিমিটার (১৩ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে, যা গত ৩০০ বছরের মধ্যে শহরটির সর্বোচ্চ হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।
থাই নৌবাহিনী জানিয়েছে, সামরিক হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালটিতে জেনারেটর পাঠানো হচ্ছে। দেশটির একমাত্র বিমানবাহী রণতরী ‘চাক্রি নরুবেত’ ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে মঙ্গলবার বন্দর ছেড়েছে।
হ্যাট ইয়াইয়ের সোংখলা প্রদেশসহ দক্ষিণাঞ্চলের নয়টি প্রদেশ বন্যাকবলিত—যেখানে ৯ লাখ ৮০ হাজার ঘরবাড়ি ও ২৭ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে থাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার সোংখলাসহ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশে বজ্রঝড়সহ প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর।
