পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তন ও প্রস্তুতির সময় বাড়ানোর দাবিতে টানা আন্দোলনের পর অবশেষে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, যথেষ্ট প্রস্তুতির সুযোগ না দেওয়া, পুরোনো ও নতুন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি এবং আন্দোলনকারীদের ওপর দমন–পীড়ন চালানোর মধ্য দিয়ে তাঁদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের দাবি, নতুন সময়সূচি সংশোধন না করায় বহু শিক্ষার্থী বাস্তবিকভাবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। মানবিক বিবেচনায় পরীক্ষাটি পিছিয়ে নেওয়ার দাবি গুরুত্ব না পাওয়ায় তাঁরা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
‘৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাইফ মুরাদ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও তাদের বাস্তব অবস্থা অনেকেই জানেন না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ সঠিক নয়। অনেক পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষা বর্জন করবেন। উপস্থিতি অস্বাভাবিকভাবে কম হলে পরবর্তী সময়ে পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও জানান তিনি।
সাইফ মুরাদ বলেন, গত ৩০ দিন ধরে তাঁরা পিএসসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যা সমাধানের আবেদন জানিয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন। প্রথম ৩০ দিন তাঁরা রাস্তায় নামেননি; শেষ দিকে নজর কাড়তে বাধ্য হয়ে কর্মসূচি দিতে হয়েছে। এতে সামান্য জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি ক্ষমা চান।
সাইফ মুরাদ অভিযোগ করেন, দেশে এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে যেখানে পেশিশক্তির ভিত্তিতে অযৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হয়; অথচ তাঁদের দাবি ছিল শুধু যথেষ্ট প্রস্তুতির সময় পাওয়া। নতুন ও পুরোনো পরীক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতায় বৈষম্য দূর করাই ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য।
লিখিত পরীক্ষার রুটিনকে ‘বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরোনো পরীক্ষার্থীরা তিন মাস আগেই আরেকটি লিখিত পরীক্ষা দিয়ে প্রস্তুত থাকতে পারেন; কিন্তু নতুন পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানান, আন্দোলনের সময় ৪০–৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, কারও মাথায় ১০টিরও বেশি সেলাই পর্যন্ত লেগেছে। এসব আহত শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে সক্ষম নন, অথচ পিএসসি বা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নেননি।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, তাঁদের আন্দোলনে রাজনৈতিক কোনো স্লোগান ছিল না, তাঁরা শুধু ন্যায্য প্রতিযোগিতার সুযোগ চেয়েছিলেন। কিন্তু পিএসসির চেয়ারম্যান নিজের রোডম্যাপ বাস্তবায়নে অনড় থাকায় পরীক্ষাটি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) এখনও পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকেই শুরু হবে।
দেশের ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ আট কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে কিছু পদ–সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষা কেবল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
