কোরআন-সুন্নাহর বাইরে আইন হবে না: মির্জা ফখরুল
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০৪ পিএম
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি স্পষ্টভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ—এই দেশে কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন করা হবে না।
তিনি বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যে বিএনপি নাকি কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিএনপি সবসময় কোরআন ও সুন্নাহর পক্ষে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের মানব কল্যাণ পরিষদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কমিটেড, আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ—এই দেশে কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন করতে দেব না। যারা বলে আমরা নাকি কোরআন ও সুন্নাহর আইন চাই না—নাউজুবিল্লাহ। আমরা সবসময় কোরআন ও সুন্নাহর মধ্যেই থাকতে চাই।
তারেক রহমান দেশে ফেরার পর মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক রহমানের বক্তব্যে বারবার ইসলাম ও আল্লাহর কথা এসেছে, যা আলেম-ওলামাদের মন জয় করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের বংশে ও রক্তে এটা আছে—আমি একজন মুসলমান এবং এতে আমি গর্বিত। ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমরা শান্তি চাই। নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক—যেখানে আমি শান্তিতে ইবাদত করতে পারব, ধর্মচর্চা করতে পারব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ রেখে যেতে পারব। এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
চরমোনাই পীরের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই বৈঠকে যে ১০টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল, তার মধ্যে কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।
আরো পড়ুন : অফিস কার্যক্রম শুরু করলেন তারেক রহমান
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে খতিব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সামাজিক মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, মাসিক সম্মানী প্রদান, ধর্মীয় উৎসবে বিশেষ ভাতা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ১৯৯৩ সালের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম সারাদেশে বিস্তার, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টকে সময়োপযোগী করা এবং তাঁদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, একই ধরনের সুবিধা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ের প্রধানদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।
স্থানীয় উন্নয়ন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতায় গেলে ঠাকুরগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দর পুনরায় চালু করা হবে। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ এলাকার দীর্ঘদিনের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
নিজের বয়সের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন হয়তো আমার শেষ নির্বাচন। বয়স হয়ে গেছে, এরপর নির্বাচন করতে পারব কি না জানি না।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশ এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। কিছু লোক পেছন থেকে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না হয় এবং চক্রান্তকারীদের ফাঁদে না পড়ি। এই নির্বাচন ভাঙার চেষ্টা চলছে—সেদিকে আমাদের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আলেম-ওলামা, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
