রাবিতে আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা স্থগিত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১২ এএম

ছবি : সংগৃহীত
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, রোববার এ নিয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।
এর আগে, বিকেল থেকে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থীরা স্থগিত নয়, উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। রাত দেড়টার দিকেও তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। তাদের দাবি, সিদ্ধান্ত বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
রাত পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভার কথা উল্লেখ করা হয়।
শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবনের সামনে থেকে তাদের অবস্থান ত্যাগ করেন। এতে উপউপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রায় সাত ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান।
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে সহউপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। তিনি হেঁটে বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। পরে তিনি প্রক্টর মাহবুবর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জুবেরী ভবনের দিকে যান। বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা সেখানে সহউপাচার্য মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সহউপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন।
পরে রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবন ছেড়ে উপাচার্য ড. সালেহ্ হাসান নকীবের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক ছাত্রী বিক্ষোভে অংশ নেন এবং পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, স্থগিত নয়, কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করবেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পোষ্য কোটার বিলুপ্তির মাধ্যমেই আন্দোলন শেষ হবে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত খুব ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। কিন্তু কাউকে জিম্মি করে আটকে রেখে সিদ্ধান্ত আদায় কোনোভাবেই কাম্য নয়। আজকে যা ঘটেছে, তা অগ্রহণযোগ্য।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, রাকসু নির্বাচন হবে কি না, তা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে খুবই সিরিয়াস।