এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব টপকে বাংলাদেশ পৌঁছেছিল সুপার ফোরের দরজায়। এরপর শনিবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামে টাইগাররা। আর এই ম্যাচে লঙ্কানদের ৪ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে জয়ের শুভসূচনা করল বাংলাদেশ দল।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১৬৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। তবে দলীয় ১ রানের মাথায় তানজিদ হাসান তামিম কোনো রান না করেই বিদায় নেন। পরবর্তীতে সাময়িক সেই চাপ সামলে নেন সাইফ হাসান এবং লিটন দাস। একসময় ৫০ রানের জুটিও গড়ে তোলেন এই দুই ব্যাটার।

তবে দলীয় ৬০ রানে লিটন ফিরে যান ব্যক্তিগত ২৩ রান করে। এরপর সাইফ একাই চার-ছক্কার ইনিংস খেলতে থাকেন, তাকে সঙ্গ দেন তাওহীদ হৃদয়। একসময় সাইফ তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক। তখন ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটাচ্ছিলেন হৃদয়। ৪৫ বলে ৬১ রান করে বিদায় নেন সাইফ। এরপর ইনিংসের বাকি সময় লড়াই করেন হৃদয়। সবশেষ দুই ম্যাচে রান করতে না পারা এই ব্যাটার এদিন তুলে নেন অর্ধশতক। তবে জয়ের ১০ রান বাকি থাকতে ব্যক্তিগত ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। পরে শামীম পাটোয়ারী ১২ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন।

তবে শেষ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা নাটক তৈরি হয়। জয়ের ক্ষেত্রে সামান্য সংশয় দেখা দিলেও ১ বল বাকি থাকতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে টাইগাররা। লঙ্কানদের হয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং দাসুন শানাকা ২টি করে উইকেট নেন।

এর আগে দিনের শুরুতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে তারা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৪ রান করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা।

শুরুটা অবশ্য বেশ আক্রমণাত্মক ছিল লঙ্কানদের। তবে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে তার করা শেষ বলে মিডল ও লেগ স্টাম্পের ওপর থেকে টেনে খেলতে চেয়েছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। টাইমিং ভালো না হওয়ায় ডিপ মিডউইকেটে সাইফ হাসানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ১৫ বলে ২২ রান করেন নিশাঙ্কা।

নিশাঙ্কা ফিরলেও ওপেনার মেন্ডিস রানের চাকা সচল রাখেন। পাওয়ার প্লেতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে শ্রীলঙ্কা তোলে ৫৩ রান। তবে পাওয়ার প্লে শেষে রান সংগ্রহে লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। অষ্টম ওভারে শেখ মেহেদিকে সুইপ করতে গিয়ে মেন্ডিস টপ এজ হয়ে বল আকাশে তুললে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে আবারও ক্যাচ নেন সাইফ।

পরে কামিল মিশরা ও কুসাল পেরেরা সুবিধা করতে পারেননি। এই সময়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাংলাদেশ লঙ্কানদের চাপে ফেলে। তবে শেষদিকে চারিথ আসালঙ্কা ও দাসুন শানাকা দারুণ ব্যাটিং করেন। বিশেষ করে শানাকা ঝড় তোলেন। ৩৭ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন তিনি, যা তার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।

আসালঙ্কা করেন ১২ বলে ২১ রান। তাতে দেড়শ ছাড়িয়ে যায় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ। বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার হন। এ ছাড়া শেখ মেহেদি নেন ২টি এবং তাসকিন আহমেদ নেন ১টি উইকেট।