চীন-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময়ে বিমূর্ত ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
চীন ও বাংলাদেশের হাজার বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং ঐতিহ্য-নির্ভর সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়েছে 'চীনা বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সপ্তাহ'। এটি 'মিলেনিয়াম কালচারাল বন্ডস'—চীন-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময় মাসের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় জমকালো এক সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. ওয়ারেস হোসেন, চীনের মনোনীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাহক মি. হান ঝিকিয়াং এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা লি শাওপেং।
বক্তারা বলেন, চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক শুধু কূটনৈতিক নয়, এটি এক হাজার বছরের পুরনো সাংস্কৃতিক বন্ধনের সোপান। এই ঐতিহ্য মানবিকতায় গাঁথা, ভাষা ও সংস্কৃতিতে মিলিত।
তারা বলেন, বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দুই জাতির মাঝে সময়ের সেতু রচনা করেছে—যেখানে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একসূত্রে আবদ্ধ।
বিশ্বে সর্বাধিক ৪৪টি ইউনেস্কো স্বীকৃত বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অধিকারী চীন তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করতে নিয়ে এসেছে অসাধারণ সব শিল্পকলার নিদর্শন।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত পরিবেশনাগুলোর মধ্যে ছিল-
* গুচেং (চীনা তারের বাদ্যযন্ত্র) পরিবেশনা, যা পরিবেশন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষক
* এরহু (চীনা দুই তারের বাদ্যযন্ত্র) পরিবেশনা, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট থেকে
* শান্ত-মারিয়াম রেড রিভার কলেজের কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের পক্ষ থেকে চমৎকার মার্শাল আর্ট প্রদর্শনী
এই পরিবেশনাগুলোতে বিমূর্ত ঐতিহ্যের শৈল্পিক ও দার্শনিক গভীরতা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। চীনা শিল্পের ছন্দ, বর্ণ ও ভাব ভাষার সীমা পেরিয়ে এক মুগ্ধতার আবহ তৈরি করে।
অনুষ্ঠানের শেষে ছিল ফিতা কাটা ও প্রদর্শনী পরিদর্শন। দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখেন চীনের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প, বাদ্যযন্ত্র ও জীবনঘনিষ্ঠ সংস্কৃতির নিদর্শন।
এই আয়োজন শুধু দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতিফলন নয়, বরং এক মানবিক ঐক্যের রূপক, যেখানে সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও মৈত্রীর সেতু।
প্রদর্শনী শেষ হবে ২৬ জুন।