ব্রামা নির্বাচন ঘিরে চক্রান্তের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে জিডি
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
ব্রামা নির্বাচন ঘিরে চক্রান্তের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে জিডি
বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ব্রামা)-এর আসন্ন নির্বাচনে স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ব্যাহত করতে একটি প্রভাবশালী চক্র নানামুখী চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই চক্রের পেছনে রয়েছেন সংগঠনেরই একজন সদস্য ও সভাপতি পদপ্রার্থী, যার রাজনৈতিক ও পারিবারিক সম্পর্ক আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত সভাপতি পদপ্রার্থী আবু হাসনাত সৈয়দ ওয়াহিদের বিয়াই ছিলেন আওয়ামী সরকারের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য এ.এফ.এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, এবং তার জামাতা রাজী মোহাম্মদ ফখরুল দুই মেয়াদে নির্বাচনবিহীন ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক প্রভাব ও সরকারি ছত্রছায়ায় এ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ সুবিধাভোগী বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াহিদ সাহেবের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। সেখানকার এক আত্মীয় সাইদুর রহমান, যিনি নিজেকে “ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টি (আইএমপি)”–এর চেয়ারম্যান এবং তথাকথিত “১৫ দলীয় সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়কারী” হিসেবে পরিচয় দেন, তার মাধ্যমে বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তরে একটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সভাপতি পদপ্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম–এর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ও সম্মানহানির প্রচেষ্টা চালানো হয়।
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, “আমি ইতোমধ্যে বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তরে প্রমাণসহ পাল্টা অভিযোগ জমা দিয়েছি। সেখানে সাইদুর রহমান ও আবু হাসনাত সৈয়দ ওয়াহিদের যোগসাজশের বিস্তারিত তথ্য, ব্যাংক লেনদেনের নথি ও অন্যান্য প্রমাণ উপস্থাপন করেছি।”
এ বিষয়ে আনোয়ারুল ইসলাম শনিবার (২৬ অক্টোবর ২০২৫) হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা একটি চক্র তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। একইসঙ্গে তিনি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
সূত্র জানায়, ঘটনাটি বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় রয়েছে এবং দলের অভ্যন্তরে তদন্ত কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
এছাড়া জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ব্রামার নির্বাচন প্রভাবশালী মহলের কারণে স্থগিত ছিল। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আদালতের রায়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হয়েছে। আনোয়ারুল ইসলাম মনে করেন, “এবারের নির্বাচন গণতান্ত্রিক চেতনার পুনর্জাগরণের প্রতীক, কিন্তু কিছু চক্র আবারও পুরনো কৌশলে সেটিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।”
নিজের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন—
“আমি ছোটবেলা থেকেই বিএনপির আদর্শে রাজনীতি করি। ২০০২ সাল থেকে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। আমি নীতি, আদর্শ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। যাদের শিকড় ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে, তারা কখনোই সত্যের বিজয় মেনে নিতে পারে না।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি দপ্তর ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে চক্রান্তে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
