সংসদ নির্বাচন এপ্রিলের প্রথমার্ধে: জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ০৮:১২ পিএম

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটি ম্যান্ডেট নিয়েই আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমি দেশবাসীকে জানাচ্ছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
ড. ইউনূস বলেন, এই ঘোষণার আলোকে নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে।
ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস জানান, আগামী রোজার ঈদের আগেই বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম একটি গৃহীত ও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদী। বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার—এই বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
'জুলাই সনদ' প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী জুলাই মাসেই সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। এই সনদে থাকবে—সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, তার তালিকা। দলগুলোর পক্ষ থেকে জনসম্মুখে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ অনুযায়ী আশু সংস্কার কাজগুলো আমরা বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাকি অংশের কিছু কাজ শুরু করে যেতে চাই। আশা করি নির্বাচিত সরকার বাকিগুলো বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।
রাখাইন করিডোর নিয়ে ‘মিথ্যা অপপ্রচার’ করা হচ্ছে অভিযোগ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য বাংলাদেশ করিডোর ব্যবহারের অভিযোগ ‘সর্বৈব মিথ্যা’।
আরো পড়ুন : শেষ মুহূর্তে জমজমাট দেশের ৩৬০০ পশুর হাট
তিনি বলেন, এটা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প মাত্র। কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অসত্য কল্পকাহিনী ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে ও অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত রয়েছে। তিনি সবাইকে এসব অপপ্রচারে কান না দেওয়ার এবং সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
জনগণকে এ বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবেন না। এসব অপপ্রচার সত্ত্বেও আমরা লক্ষ্যচ্যুত হবো না। এই জটিল সমস্যাটি সমাধানে আমাদের কাজ চালিয়ে যাব।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সীমান্ত নিরাপত্তা প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব মার্চে ঢাকা সফরে এসে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তার জন্য একটি ত্রাণ চ্যানেল খোলার প্রস্তাব দেন, যেটি এখনো প্রস্তাবনা পর্যায়ে রয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সফরকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা চেয়েছেন, এবং তারা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।