গুমের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১২ এএম
ছবি : সংগৃহীত
গুমের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজার বিধান রেখে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ’–এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। সোমবার (১ নভেম্বর) এই অধ্যাদেশের সরকারি গেজেট জারি করা হয়। এর আগে গত ৬ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধগুলো জামিনযোগ্য নয় এবং আপসযোগ্যও নয়।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যদি গ্রেপ্তার, আটক, অপহরণ বা স্বাধীনতা হরণের পর বিষয়টি অস্বীকার করেন অথবা ওই ব্যক্তির অবস্থান ও পরিণতি গোপন রাখেন এবং এর ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন, তবে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তির শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড।
গুমের ফলে ভুক্তভোগীর মৃত্যু হলে বা গুমের পাঁচ বছর পরও তাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় না পাওয়া গেলে দায়ী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
অধ্যাদেশে আরো বলা হয়েছে, গুম সম্পর্কিত সাক্ষ্য–প্রমাণ নষ্ট করা, গোপন আটককেন্দ্র স্থাপন বা ব্যবহার করা হলে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।
এ ছাড়াও বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্যও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। যদি কোনো কমান্ডার বা দলনেতা অধস্তনদের এ ধরনের অপরাধ করতে আদেশ, অনুমতি, সম্মতি বা প্ররোচনা দেন, কিংবা নিজে অংশ নেন, তবে তিনি মূল অপরাধের শাস্তিই পাবেন। এমনকি অবহেলা, তত্ত্বাবধানের ব্যর্থতা বা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ফলে অধস্তনরা গুমের মতো অপরাধে জড়ালেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দায়ী করা যাবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার আগ পর্যন্ত ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তার অবস্থান গোপন রাখা যেতে পারে। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকলেও তার অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
