বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের নাম আসায় তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইজিপিকে পদ থেকে অপসারণ না করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ, অ্যাডভোকেট শাহিন হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. আতিকুর রহমান—এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশটি প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জন প্রশাসন সচিব এবং আইন সচিবের দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে আইজিপি বাহারুল আলমসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নাম এসেছে। সংবেদনশীল এই প্রতিবেদনে আইজিপির বিরুদ্ধে নেতিবাচক তথ্য উপস্থাপন করা হয়। বিশেষ করে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) দায়িত্ব পালনকালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ উঠে এসেছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিবেদনের পর প্রশাসনের ভেতরে আলোচনা-সমালোচনা তীব্র হয়েছে।

আরো পড়ুন : প্রহসনের নির্বাচন থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। পরে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় আদালত ১৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। আরো অন্তত ২২৮ জন বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান। তবে শুরু থেকেই তদন্ত ও বিচার নিয়ে ভুক্তভোগীরা নানা প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।

ঘটনার প্রায় দেড় দশক পর এবং জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সাত সদস্যের জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশন ৩০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।

সেই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়ানক সব তথ্য। প্রতিবেদনে ১৪৬ নম্বর পয়েন্টে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। তারা হলেন, তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদ, তৎকালীন অতিরিক্ত আইজিপি (এসবি প্রধান) বাহারুল আলম, সাবেক (পলাতক) অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, বিডিআর হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দ এবং তার অধীনস্থ তদন্ত দল।