বাংলাদেশে সরকারি আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে: যুক্তরাষ্ট্র

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩১ এএম

মার্কিন রিপোর্টে বাংলাদেশসহ ৬৯টি দেশকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের সরকারি আয় তথা রাজস্ব ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বাজেট ও সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতায় ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৫ ফিসকাল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্টে বাংলাদেশসহ ৬৯টি দেশকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সরকার আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে বেশ কিছু সংস্কার শুরু করেছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মালদ্বীপ দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে আর্থিক স্বচ্ছতার ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। মোট ১৩৯টি দেশ নিয়ে করা এ পর্যালোচনায় ৭১টি দেশকে ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
রিপোর্টে বাংলাদেশের জন্য সুপারিশ করা হয়— বছর শেষে আর্থিক প্রতিবেদন যুক্তিসঙ্গত সময়ে প্রকাশ করা এবং বাজেট নথি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী তৈরি করা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, বাজেট প্রণয়নকারী আগের প্রশাসনের জায়গায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। নতুন সরকার আগের সরকারের সুপারিশ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া মেনে চলার পাশাপাশি স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে সংস্কার শুরু করেছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আগের সরকার নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও পাস হওয়া বাজেট প্রকাশ করেছিল এবং তা অনলাইনে পাওয়া যেত। তবে বছর শেষে প্রতিবেদন সময়মতো প্রকাশিত হয়নি। বাজেট তথ্যকে নির্ভরযোগ্য মনে হলেও নথি আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী তৈরি হয়নি। ঋণ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশিত হলেও নির্বাহী দপ্তরের ব্যয়ের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি এবং পূর্ণাঙ্গ রাজস্ব-ব্যয় চিত্র উপস্থাপন করা হয়নি।
সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের সর্বোচ্চ নিরীক্ষা সংস্থা সরকারের হিসাব পুরোপুরি পর্যালোচনা করেনি, তবে সংক্ষেপে কিছু ফলাফল প্রকাশ করেছে। যদিও সংস্থাটি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাধীন নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের নিয়ম আইনে নির্ধারিত থাকলেও সীমিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব চুক্তিকে উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ করার উদ্যোগ নেয় এবং আগের প্রশাসনের সরাসরি আলোচনায় হওয়া বা চলমান চুক্তিগুলো স্থগিত করেছে।
মার্কিন সুপারিশে বলা হয়েছে— নির্বাহী দপ্তরের ব্যয় বাজেটে স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা, রাজস্ব-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রকাশ করা, নিরীক্ষা সংস্থাকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাধীন করা, বাজেটে সরাসরি প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, সময়মতো নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের তথ্য উন্মুক্ত রাখা।