শান্তিচুক্তি না হলে সামরিকভাবে লক্ষ্য পূরণের হুঁশিয়ারি পুতিনের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ এএম

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত
ইউক্রেন যদি শান্তিচুক্তিতে রাজি না হয়, তবে সামরিক শক্তির মাধ্যমেই রাশিয়া তার লক্ষ্য পূরণ করবে বলে সতর্ক করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও আলোচনার সম্ভাবনা পুরোপুরি নাকচ করেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে এক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিয়ে পুতিন জানান, ইউক্রেন চুক্তিতে না এলে সামরিকভাবেই রাশিয়া তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করবে।
অনেকের মতে, এই অবস্থান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী বিশ্বব্যবস্থার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। যদিও ট্রাম্প বারবার পুতিনকে যুদ্ধ থামাতে আহ্বান জানিয়েছেন। পুতিন তার প্রচেষ্টার প্রশংসা করলেও প্রস্তাব মানেননি।
অন্যদিকে ইউক্রেন সফরে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বিবিসিকে বলেন, অন্তত ট্রাম্প আলোচনার টেবিলে পুতিনকে এনেছেন। তবে প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যসহ মিত্ররা রাশিয়ার ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ দেবে এবং ইউক্রেনকে আরো সামরিক সহায়তা প্রদান করবে।
আরো পড়ুন : পুতিন, জিনপিং ও কিমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ট্রাম্প
গত মাসে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। তখন তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে পুতিনের সরাসরি সাক্ষাৎ আয়োজনেরও চেষ্টা করেছিলেন। পুতিন অবশ্য বলেছেন, তিনি কখনোই বৈঠকের সম্ভাবনা বাতিল করেননি। তবে সেটি কার্যকর হবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।
পুতিনের মতে, যেকোনো আলোচনার আগে যথাযথ প্রস্তুতি জরুরি। চাইলে জেলেনস্কি মস্কোতেও যেতে পারেন, তবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটিকে সরাসরি অগ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিকে জেলেনস্কি রাশিয়ার অনীহাকেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরদারের যৌক্তিকতা হিসেবে তুলে ধরছেন।
হোয়াইট হাউসে পোল্যান্ডের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কারোল নাভরোকিকে স্বাগত জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ধাপের নিষেধাজ্ঞা ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে, প্রয়োজনে আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বেইজিংয়ে রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, টানেলের শেষে সামান্য আলো দেখা যাচ্ছে। সাধারণ জ্ঞান কাজ করলে সমাধান আসবে, না হলে সামরিকভাবেই আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে হবে।
তিনি স্পষ্ট করে জানান, দনবাস অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেবে না এবং রুশভাষীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে চুক্তি হলেও দনবাসে পশ্চিমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা কার্যকর হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেওয়া উত্তর কোরিয়ার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দায়িত্ব। কিমকেও তিনি ধন্যবাদ জানান এবং রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ককে বিশেষ আস্থা, বন্ধুত্ব ও জোটের সম্পর্ক বলে আখ্যায়িত করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউক্রেনের মিত্রদের নিয়ে ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’-এর বৈঠক আহ্বান করেছেন। এলিসি প্রাসাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে রেখে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও রাশিয়ার কাছ থেকে যুদ্ধবিরতি আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।