এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সেটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি- স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি।

হংকং ও আফগানিস্তানকে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে সুপার ফোরে উঠে বাংলাদেশ। সুপার ফোরেও শুরুটা দারুণ করে টাইগাররা। শ্রীলংকাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শুভ সূচনা করে তারা। এই লংকানদের কাছেই গ্রুপ পর্বে ৬ উইকেটে হেরেছিল লিটন দাসের দল। সুপার ফোরে শ্রীলংকাকে ৭ উইকেটে ১৬৮ রানের বেশি করতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা।

১৬৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে জয়ের পথ সহজ করেন ওপেনার সাইফ হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। দু’জনের দুর্দান্ত হাফ-সেঞ্চুরিতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৫ রান দরকার ছিল টাইগারদের। শেষ ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ম্যাচের স্কোর সমান করে তারা। এরপর তিন বলে ২ উইকেট হারালে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। শেষ পর্যন্ত ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। 

ভারতের বিপক্ষে জয় পেলে এশিয়া কাপের ফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক পারফরমেন্সের বিচারে ভারতের বিপক্ষে এগিয়ে থেকে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে সেরা বোলিং পারফরমেন্স দেখিয়েছে টাইগাররা। তাই মাঠে নামার আগে মানসিকভাবে চাঙা থাকবে তারা। পাশাপাশি এই সপ্তাহে দুবাইয়ে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু ম্যাচ হওয়ায় উইকেট ধীর গতির হওয়ার আশা করা হচ্ছে। তাতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে বাংলাদেশের। এছাড়া টস জিতলেও এগিয়ে থাকবে লিটন বাহিনী। কারণ রান তাড়া করে দু’টি ম্যাচ জিতেছে তারা। তাই টস জয়কে ভাগ্যবান প্রমাণ করেছেন টাইগার অধিনায়ক। 

টুর্নামেন্টে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে দু’বারসহ চারটি ম্যাচ জিতেছে ভারত। কিন্তু এমন পরিসংখ্যানে চিন্তিত নন বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। তার মতে, যেকোনও দলের কাছে হারতে পারে ভারত। ক্রিকেট পরাশক্তিদের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে তিনি বলেন, প্রতিটি দলেরই ভারতকে হারানোর সামর্থ্য আছে। তারা আগে কি করেছে সেটি নিয়ে চিন্তিত নই। এটি নতুন ম্যাচ। এ ম্যাচ নিয়ে আমরা ভাবছি। সাড়ে তিন ঘণ্টার ম্যাচে যতটা সম্ভব নিজেদের সেরাটা খেলব এবং ভারতের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে ম্যাচ জয়ের চেষ্টা করব।

এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৭বার ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র একবার জয় পেয়েছে টাইগাররা। ২০১৯ সালে ভারত সফরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে টিম ইন্ডিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল তারা। এশিয়া কাপে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এর মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র দু’বার জিতেছে এবং ১৩বার হেরেছে। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে হওয়া এশিয়ার কাপে দুই ম্যাচই হেরেছিল টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে অধিনায়ক লিটন দাস ইনজুরিতে পড়লেও তার খেলা নিয়ে সংশয় নেই। টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। ৪ ইনিংসে ১১৯ রান করেছেন উইকেটকিপার ব্যাটার। 

বাংলাদেশ দল

লিটন দাস (অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হাসান ইমন, সাইফ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

ভারত দল

সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), শুভমান গিল (সহ-অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, শিভম দুবে, অক্ষর প্যাটেল, জিতেশ শর্মা (উইকেটরক্ষক), জসপ্রিত বুমরাহ, আর্শদীপ সিং, বরুন চক্রবর্তী, কুলদ্বীপ যাদব, সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), হার্ষিত রানা ও রিংকু সিং।