টেলিটকের প্রযুক্তিগত বৈষম্য নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
ছবি : ভোরের কাগজ
ঢাকায় টেলিটকের প্রযুক্তিগত বৈষম্য নিরসন ও ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড বরাদ্দের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংগঠন ও টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞেরা বক্তব্য রাখেন।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, তরঙ্গ নিলামে সরকারের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী। একের পর এক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার ধারাবাহিকতায় টেলিটককেও বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি দাবি জানান, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে টেলিটকের জন্য ৭০০ ব্র্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দ করতে হবে।
আরো পড়ুন : যমুনা ফিউচার পার্কের মোবাইল মার্কেট বন্ধ ঘোষণা
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসির বলেন, বিদেশি অপারেটরদের একচেটিয়া সুবিধা দেওয়া হলে বাজারে প্রতিযোগিতা ধ্বংস হবে। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠান বাজারের ৯০ শতাংশ লাভ করছে, আরেকটি প্রতিষ্ঠান ৮ শতাংশ। বাকি অপারেটর ও টেলিটক লোকসান গুনছে। এ অবস্থায় টেলিটককে তরঙ্গ বরাদ্দ না দিলে অপারেটরটি আরো পিছিয়ে পড়বে।
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড আন্তর্জাতিকভাবে ‘গোল্ডেন ব্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত। এটি বিস্তৃত কভারেজ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করে। কিন্তু বিটিআরসির সাম্প্রতিক নিলাম সিদ্ধান্ত টেলিটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, এক বেসরকারি অপারেটর প্রকাশ্যে টেলিটকের জন্য কোনো ব্যবস্থাই না রাখার আহ্বান জানিয়েছে, যা বৈষম্যমূলক ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদেশি অপারেটরদের আগ্রাসী বাজারচর্চার কারণে অতীতেও গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেলিটক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জনগণের সাশ্রয়ী সেবা নিশ্চিত করতে। অনলাইন ভর্তি আবেদন, চাকরির আবেদন ও বিল পরিশোধের মতো জনবান্ধব সেবার অগ্রদূতও টেলিটক। মাত্র ৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আরো বলেন, ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড না পেলে গ্রামীণ জনগণ মানসম্মত সেবা থেকে বঞ্চিত হবে, স্মার্ট বাংলাদেশ লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে, আর বিদেশি অপারেটররা অতিরিক্ত বাজার সুবিধা পাবে। শীর্ষ বিশেষজ্ঞেরা ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্তকে টেলিটকের জন্য মারাত্মক আঘাত এবং জাতীয় অপারেটরকে বাজার থেকে সরানোর কৌশল বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কর্মী সাধনা মহল, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ মোবাইলফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম, গ্রীন পার্টির চেয়ারম্যান রাজু খানসহ অনেকে।
