×

মুক্তচিন্তা

ক্ষমতার নতুন সমীকরণ: পরিবারতন্ত্রের অবসান থেকে ভূরাজনীতি পর্যন্ত

রহমান মৃধা, সুইডেন থেকে

রহমান মৃধা, সুইডেন থেকে

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৪ পিএম

ক্ষমতার নতুন সমীকরণ: পরিবারতন্ত্রের অবসান থেকে ভূরাজনীতি পর্যন্ত

প্রতীকী ছবি

এই কথাটা এখন যেন পুরো বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপরই দাঁড়িয়ে গেছে। কথাটা যতই অদ্ভুত শোনাক, ঘটনা কিন্তু ততটাই বাস্তব। তাই লিখাটি এভাবে শুরু করলাম। কেন, সেটাই এবার বলে নেওয়া যাক।

মাইনাস টু ফর্মুলার কথা নিশ্চয়ই আগেও শুনেছেন, এবং সাম্প্রতিক সময়েও অসংখ্য বিশ্লেষণে এটি এসেছে। কথাগুলো পরিচিত। শেখ পরিবার এবং জিয়া পরিবার আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি থেকে বাদ যাবে। দলগুলো জনগণের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। পরিবার তন্ত্রের অবসান হবে। একনায়ক তন্ত্রের শাসন শেষ হবে। স্বৈরাচার ভাঙবে। এবং জনগণের বুকের তাজা রক্ত আর রাজপথে ঝরবে না। পরিবার তন্ত্রের রাজনীতি বিলুপ্ত হবে।

এ প্রসঙ্গে ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, পরিবার তন্ত্রের বিলুপ্তি অনেক দেশেই ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তানসহ বহু রাষ্ট্র এখন নতুন দিগন্ত, নতুন প্রজন্ম এবং নতুন ধারার পথে হাঁটছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগকে পরিবার তন্ত্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও তাদের সব কর্মসূচি আপাতত স্থগিত, তবে এটি পরিষ্কার যে শেখ পরিবারের জন্য বাংলাদেশের রাজনীতির সেই নেতৃত্বের সুযোগ আজীবনের জন্য শেষ। দূর প্রবাস থেকে আমি স্পষ্ট করেই কথাটি বলছি।

এখন প্রশ্ন বিএনপিকে নিয়ে। ইঙ্গিত, অভিক্ষেপ, পরিস্থিতি, ভূরাজনৈতিক অবস্থা সব মিলিয়ে কেন যেন মনে হচ্ছে, এই নির্বাচনে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান দুজনেই কার্যত মঞ্চ থেকে ঝরে পড়েছেন। একজন নিয়তির ডাকে, অন্যজন নিজের দলের রাজনৈতিক নেতাদের কারণে। এখানে ভারতের স্বার্থের প্রশ্ন আছে। যেকোনো মূল্যে জামায়াত যেন ক্ষমতায় না আসে। অন্যদিকে আমেরিকা আসা বাদি বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যবহার করে সিলিগুড়ি করিডোর, সেভেন সিস্টার এবং বন্দর অঞ্চলকে কেন্দ্র করে নতুন ভূরাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে পারে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন সবার প্রিয় করিডোর। তাই উপরের শিরনাম, গরিবের বউ সবার ভাবি।

জিয়া পরিবার যদি অতীত থেকে শিক্ষা না নেয় এবং ভাবেন তারাও ইতিহাস হবেন, তবে তাদের পরিণতিও অন্যান্য পরিবার তন্ত্রের মতোই হবে। আর যদি মনে করেন এখনই থামতে হবে, এবং বিএনপির মতো বৃহৎ সংগঠন জিয়া পরিবার ছাড়া টিকে থাকার চেষ্টা করবে, তাহলে পরিবারের সদস্যদের হয়তো ঝরে পড়তে হবে না, পরিবার হয়তো বাঁচবে কিন্তু বিএনপি টিকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। কারণ এই দলে যে পরিমাণ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ সক্রিয়, এবং সংগঠনের ভেতরে যে মাত্রার দ্বন্দ্ব আছে সেখানে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তাই বড় ছবি।

বাংলাদেশ যদি সৎ পথে পরিচালিত হয় এবং সত্যিকারের সাহস দেখাতে পারে, তবে জামায়াত একা ক্ষমতায় আসতে পারে। কিন্তু আমেরিকা বা ভারত যদি বাধা সৃষ্টি করে, তবে তা থেকে রেহাই পেতে হলে দরকার সংঘবদ্ধ এবং একটি শক্তিশালী সংগঠিত জোট তৈরি করা। এবং সেই সম্মিলিত শক্তি হিসেবে জামায়াত, এনসিপি, নাগরিক পার্টি, এবি পার্টি এবং নতুন তারুণ্যের শক্তি একসাথে নির্বাচন করলে এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য পেলে কোনো শক্তিই বাংলাদেশকে পরাজিত করতে পারবে না। এবং তথা কথিত অতীতের উক্তি গরিবের বউ সবার ভাবি আজীবনের জন্য বিলীন হয়ে যাবে।

ড. ইউনূস যদি সত্যিই নতুন প্রজন্মের জাতির পিতা হিসেবে অমর হয়ে বাংলাদেশের হৃদয়ে স্থান পেতে চান, তবে যারা তাকে ভালোবেসে, বিশ্বাস করে দেশের দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের প্রতি নুন‍্যতম সহানুভূতি দেখিয়ে সেই কাজটি নিশ্চিত করতে পারেন। এবং সেটাই হবে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য এবং অঙ্গীকার। আমরা আছি আপনার সাথে। জাগো বাংলাদেশ, জাগো।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, প্রাক্তন পরিচালক ফাইজার, সুইডেন, [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

মণিপুরী জীবনচিত্রের আলোকপ্রদর্শনী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে

৯ দিনব্যাপী প্রদর্শনী মণিপুরী জীবনচিত্রের আলোকপ্রদর্শনী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে

ক্ষমতার নতুন সমীকরণ: পরিবারতন্ত্রের অবসান থেকে ভূরাজনীতি পর্যন্ত

ক্ষমতার নতুন সমীকরণ: পরিবারতন্ত্রের অবসান থেকে ভূরাজনীতি পর্যন্ত

স্মার্টফোন আমদানি শুল্ক থেকে শুরু করে লাগেজ ভাঙচুর: কার দায়, কার জবাবদিহি?

স্মার্টফোন আমদানি শুল্ক থেকে শুরু করে লাগেজ ভাঙচুর: কার দায়, কার জবাবদিহি?

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App