সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের শাসনামলে সিরিয়ার ওপর আরোপিত সব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির আইনসভা মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেস এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে।
গৃহযুদ্ধ ও জাতিগত সংঘাতে বিধ্বস্ত সিরিয়ায় দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। খবর এএফপির।
২০০০ সালের জুলাইয়ে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদের মৃত্যুর পর তার ছেলে বাশার আল আসাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট হায়াত তাহরির আল শামসের (এইচটিএস) অভিযানের মুখে তিনি পদত্যাগ করে সপরিবারে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন। এরপর সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন আহমেদ আল শারা। একসময় আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার সিরিয়া শাখার নেতা ছিলেন শারা।
বাশার আল আসাদের শাসনামলে সিরিয়ার ওপর ডজনের বেশি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে জ্বালানি তেল বিক্রি, ব্যাংকিং কার্যক্রম ও বিদেশি বিনিয়োগে কড়াকড়ি আরোপ ছিল উল্লেখযোগ্য।
সিরিয়ায় ক্ষমতার পরিবর্তনের পর সৌদি আরব ও তুরস্কের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিলেন। তবে সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করা হয়। বিলটির পক্ষে ভোট দেন ৭৭ জন সিনেটর, বিপক্ষে ভোট দেন ২০ জন। পরে এই বিল কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদন পায়।
ভোটাভুটির পর সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য জিয়ান্নে শাহীন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, গত কয়েক দশক ধরে সিরিয়ার সাধারণ জনগণ যে অকল্পনীয় দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে গেছে, এই সিদ্ধান্ত তাদের সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে দেশ পুনর্গঠনের একটি বাস্তব সুযোগ এনে দিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিরিয়া সরকার। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, সিরিয়ার জনগণের পাশে দাঁড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে, আমরা তা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।
