২০ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ নিয়ে মত জানাবে বিএনপি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০২:৪৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর চূড়ান্ত খসড়া পর্যালোচনা করে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে মতামত জানাবে বিএনপি।
রবিবার (১৭ আগস্ট) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য দিয়ে জানান, খসড়ায় কিছু বিষয়ে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে এবং কিছু বিষয় সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।
এরইমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই সনদের চূড়ান্ত খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়েছে। এতে রাষ্ট্রের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
আরো পড়ুন : প্রধানমন্ত্রী হলে দলীয় প্রধানের পদে থাকা যাবে না
খসড়ায় বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আলোচনার মাধ্যমে বেশ কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে। তবে সব দল সব প্রস্তাবে সম্মত হয়নি, কিছু দল কিছু সুপারিশে আপত্তি জানিয়েছে।
সনদের ভূমিকায় উল্লেখ করা হয়েছে- ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে প্রতিশ্রুত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গত ৫৩ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। রাষ্ট্রক্ষমতার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ও অপব্যবহারের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান বিকৃতি, দমনমূলক আইন প্রণয়ন, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে দলীয়করণ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের সুযোগ তৈরি করেছে। তবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে জনগণের আন্দোলনে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা পতনের পর রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠনের প্রবল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।
সংবিধানে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র ও ধর্মীয় স্বাধীনতা-সম্প্রীতি’ রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি যুক্ত হবে- বাংলাদেশ একটি বহু-জাতি, বহু-ধর্মী, বহু-ভাষী ও বহু-সংস্কৃতির দেশ, যেখানে সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে।
মৌলিক অধিকারগুলোর তালিকা সংশোধন ও সম্প্রসারণেরও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে পাঁচটি দল মূলনীতির অংশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে সংসদের দুই কক্ষের সদস্যদের গোপন ভোটে। প্রার্থী হওয়ার সময় তিনি কোনো সরকারি বা রাজনৈতিক পদে থাকতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। তাঁর এখতিয়ারে মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন, প্রেস কাউন্সিল, আইন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের প্রধান ও সদস্য নিয়োগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
রাষ্ট্রপতির অভিশংসনের ক্ষেত্রে নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পেলে তা উচ্চকক্ষে যাবে এবং সেখানেও দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ক্ষমা প্রদানের আগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির পরিবারের সম্মতি নেওয়ার বিধানও প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না।