মীরসরাই হানাদারমুক্ত দিবস আজ
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম
ছবি : ভোরের কাগজ
মীরসরাই হানাদারমুক্ত দিবস আজ (৮ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলিত অভিযানে চট্টগ্রামের মীরসরাই অঞ্চল পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও তাৎপর্যের সঙ্গে উদযাপিত হলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অন্যান্য সংকটের কারণে গত বছরের মতো এবারও বড় কোনো কর্মসূচি থাকছে না।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বাধীন বিএলএফ গ্রুপের প্রায় দু’শ মুক্তিযোদ্ধা মীরসরাই সদরের তিন দিক ঘিরে ফেলে। সকাল থেকে গুলিবিনিময়ের পর পাক সেনারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা থানায় প্রবেশ করে আটটি রাইফেল উদ্ধার করেন। পরে জানা যায়, পাক বাহিনী চট্টগ্রামের দিকে পিছু হটেছে।
মীরসরাই শত্রুমুক্ত হওয়ার খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। হাজারো মানুষ জয় বাংলা স্লোগানে মীরসরাই হাই স্কুল মাঠে সমবেত হয়। তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত পরিবেশন শেষে মুক্তিযোদ্ধারা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ঘোষণা করেন—মীরসরাই এখন স্বাধীন এলাকা।
এর পর থেকে প্রতিবছর ৮ ডিসেম্বর দিনটি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়ে আসছে। সাধারণত বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা থাকত। কিন্তু চলতি বছর ফান্ড সংকট এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সজনিত কারণে শুধুমাত্র বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে গত বছর কোনো আয়োজন ছিল না। মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সও হয়ে গেছে। ফান্ড সংকটও রয়েছে। তাই এবছর কেবল বধ্যভূমিতে ফুল দেওয়া হবে।
মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোমাইয়া আক্তার বলেন, এটি জাতীয় দিবস নয়, স্থানীয় ইতিহাসের অংশ। প্রতি বছর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের প্রজন্ম উদ্যোগ নিতেন, উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতা করত। এবছর তারা কোনো যোগাযোগ করেননি। তারা চাইলে আমরা সহযোগিতা করবো।
