অবৈধ সম্পদ: যুবলীগ নেতা বাবর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম

যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও তার পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাতক আলোচিত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারি পরিচালক মো নওশাদ আলী। প্রায় ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে চট্টগ্রামের আলোচিত যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে এজাহারে বলা হয়, বাবরের স্ত্রী জেসমিন আক্তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এসব সম্পদ অর্জনে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, জেসমিন আক্তার দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অপরাধ করেছেন। আর স্বামী বাবর সহযোগী হিসেবে দণ্ডবিধি ১০৯ ধারার আওতায় অভিযুক্ত।
বাবর চট্টগ্রামের রাজনীতিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে তিনি পরিচিত পুলিশ ও র্যাবের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে। কোটি টাকার রেলের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার আর একের পর এক খুনের ঘটনায় তার নাম বহুবার শিরোনাম হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৪ জুন রেলের টেন্ডার নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাবরের অনুসারী ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারীদের সংঘর্ষে এক শিশুসহ দুজন নিহত হয়। এই জোড়া খুন মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে রাউজানের আকবর-মুরাদ হত্যা, বিএনপি কর্মী আজাদ হত্যা, মির্জা লেনের ডাবল মার্ডার, সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আশিক হত্যা, তামাকুমুণ্ডি লেনে রাসেল হত্যা, ষোলশহরে ফরিদ হত্যা এমন ডজনখানেক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী অসীম রায় বাবু নিহত হওয়ার পর বাবর দুবাই পালিয়ে যান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে ফিরে আসলেও ২০১৯ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম কারাগারে সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী খুন হওয়ার পর তিনি আবার বিদেশে পালান। পরে শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের ছায়ায় দেশে ফিরে ফের সক্রিয় হন রাজনীতিতে।
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে বাবর ও তার সহযোগীদের প্রকাশ্যে রাস্তায় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত এবং ছাত্রদের উপর হামলা করতে দেখা গেছে। এমনি একাধিক মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সে আবার দুবাই পালিয়ে যায়।