বিক্ষোভে উত্তাল জর্জিয়া, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢোকার চেষ্টা জনতার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৬ এএম

নির্বাচনবিধি ও ইইউ আলোচনায় স্থবিরতার বিরুদ্ধে জর্জিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত
ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের আলোচনা স্থগিত রাখা ও গত সংসদীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগকে কেন্দ্র করে জর্জিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানী তিবলিসিতে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে এগিয়ে গেলে তাদের এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এ সময় পুলিশ জলকামান ও পিপার স্প্রে ব্যবহার করে ভাঙচুর ঠেকায় এবং বহু বিক্ষোভকারীকে আটক করে। এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনকালে রাজধানীর রাস্তায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জর্জিয়ার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা নিয়ে পথে নেমে সরকারবিরোধী স্লোগান তুলে। বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বর্জন করায় বিক্ষোভ শুরু হয়। অপেরা গায়ক পাতা বুড়চুলাদজে বিক্ষোভিকেও নেতৃত্ব দেন এবং সরকারের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনেই ঢোকার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী হস্তক্ষেপ করে।
বিবিসি প্রতিবেদনের অনুয়ায়ী, গত সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে শাসক জর্জিয়ান ড্রিম দল জয় দাবি করার পর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলছে। বিরোধী দলগুলো দাবি করছে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। এরপর থেকে সরকার ইইউ-তে যোগদানের আলোচনা স্থগিত রেখেছে। এমন পরিস্থিতিই এবার নতুন করে বিক্ষোভ তীব্র করেছে।
আরো পড়ুন : ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ইরানে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক তরুণী ইয়া জানান, সরকারিভাবে তদারকির কারণে তারা জনসমক্ষে পোশাক পরিধানে সাবধানতা অবলম্বন করছেন। তিনি জানান, বিক্ষোভকারীরা রঙিন পোশাক বা পরিচিত চিহ্ন এড়াচ্ছেন যাতে নজরদারিতে ধরা না পড়ে। বিক্ষোভকারীরা আরো অভিযোগ করেন, সার্বিকভাবে সরকারের দমননীতি বাড়িয়েছে; স্বাধীন গণমাধ্যম, সরকারবিরোধী কর্মী ও পশ্চিমা মনোভাবাপন্ন নেতা-নেত্রীদের ওপর অত্যাধিক নজরদারি ও গ্রেপ্তার চলছে।
এদিকে সরকারি পক্ষ বলছে, রাস্তা অবরোধের মতো বেআইনি কার্যকলাপে অংশ নেওয়ার জন্য শতশত বিক্ষোভকারীকে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতি জনকে ৫ হাজার জর্জিয়ান লারি (প্রায় ১,৮৩৫ ডলার) জরিমানা করা হয়েছে। আর পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি অনেককে আটকও করা হয়েছে।
রাজনৈতিক উত্তেজনা ও ইইউ-যোগদানের প্রশ্নকে কেন্দ্র করে জর্জিয়ায় চলমান এই আন্দোলন ভবিষ্যতে দেশটির মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া, পশ্চিমা সম্পর্ক ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।