ট্রাম্পের শান্তি আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৭০

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

ট্রাম্পের শান্তি আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। শনিবার (৪ অক্টোবর) উপত্যকায় বিভিন্ন এলাকায় বিমান ও স্থল হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় চিকিৎসাকর্মীরা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গাজার যুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আংশিকভাবে তা মেনে নেওয়ার পরও ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রেখেছে। শনিবারই দুর্ভিক্ষকবলিত গাজা সিটিতে ইসরায়েলের হামলায় ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি সেনারা শহরটিতে জোরালো অভিযান চালাচ্ছেন, ফলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণের জনাকীর্ণ এলাকায় পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
আরো পড়ুন : জিম্মি মুক্তিতে রাজি হামাস, গাজা দখল স্থগিতের নির্দেশ ইসরায়েলের
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তুফফাহ এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে হামলায় ১৮ জন নিহত ও আরো কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের ফলে আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার জরুরি পরিষেবা বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে দুই মাস থেকে আট বছর বয়সী সাতটি শিশুও রয়েছেন।
দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরকেও লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, যেখানে দুই শিশু নিহত এবং অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। আল-মাওয়াসি, যা ইসরায়েল কর্তৃক ঘোষণা করা হয় একটি “নিরাপদ ও মানবিক এলাকা”, সেখানে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েও হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার সক্ষমতা সীমিত। আল-জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরসহ মধ্যাঞ্চলের অন্যান্য এলাকায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে। হাসপাতালগুলো জ্বালানিসংকটের মধ্যেও সচল থাকলেও, চিকিৎসা দেওয়ার পরিমাণ যথেষ্ট নয়। খোদারি আরো বলেন, মাঠে যা ঘটছে, তাতে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
শনিবার হামাসকে দ্রুত জিম্মিদের মুক্তি দিতে এবং যুদ্ধ বন্ধে শান্তি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান ট্রাম্প। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, আমি দেরি মেনে নেব না। কোনো ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয় যেখানে গাজা আবার হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। এটি দ্রুত শেষ করতে হবে এবং সবার সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করা হবে।
প্রস্তাবের প্রথম ধাপে হামাসের কাছে থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মি ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাবে। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা মিসরে গিয়ে জিম্মি মুক্তি এবং স্থায়ী শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন। সোমবার ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি মিসরে বসে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবে।
হামাস এখনও অস্ত্র সমর্পণ করবে কি না তা স্পষ্ট করেনি, তবে তারা ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ মেনে নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং বন্দিদের মুক্তি।