যুবসমাজই জাতির চালিকাশক্তি: প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২৪ পিএম

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকতে পারে না। তিনি আহ্বান জানান, যুবসমাজ তাদের মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখুক। তরুণদের সাফল্য যেন কেবল ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ না থেকে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড–২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউনূস বলেন, আজ আমরা তারুণ্যের শক্তিকে উদযাপন করছি, এটিই জাতির চালিকাশক্তি। একটি দেশের যুবসমাজ সক্রিয়, উদ্যমী ও উদ্ভাবনী হলে কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে পারে না। তিনি মনে করিয়ে দেন, তরুণরা শুধু শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ইতিহাসে তরুণরাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে, যুগে যুগে ইতিহাস রচনা করেছে।
তিনি বলেন, চলার পথে সবসময় নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে—কখনো জনস্বাস্থ্যের সংকট, কখনো শিক্ষার ঘাটতি, আবার কখনো পরিবেশগত বিপর্যয়। তবে এসব বাধা নিয়ে হতাশ না হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে, আর এ নেতৃত্বও আসবে তরুণদের কাছ থেকেই।
স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি কেবল মানবকল্যাণেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং আত্মোন্নয়ন, চরিত্র গঠন ও নেতৃত্ব বিকাশেরও আদর্শ মাধ্যম। তরুণরা কেবল স্বেচ্ছাসেবক হয়ে থাকবেন না, বরং সমাজের নীতিনির্ধারক, উদ্ভাবক ও পরিবর্তনের স্থপতি হয়ে উঠবেন।
আরো পড়ুন : চাকরির জন্য নয়, উদ্যোক্তা হওয়ার জন্যই মানুষের জন্ম : প্রধান উপদেষ্টা
তিনি আরো বলেন, আজকের এই পুরস্কার শুধু স্বীকৃতি নয়, এটি তরুণদের প্রতি আহ্বান—তারা যেন আরো সাহসী হয়ে নেতৃত্ব দেয় এবং সমাজের কল্যাণে নতুন ধারণা ও উদ্ভাবনে কাজ করে।
ইউনূস উল্লেখ করেন, তরুণদের ছোট ছোট উদ্যোগ বিশাল পরিবর্তনের পথ তৈরি করতে পারে। স্বাস্থ্যখাতে তাদের সামান্য উদ্যোগ অসংখ্য শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে পারে, শিক্ষায় তাদের প্রচেষ্টা মান উন্নত করতে পারে, আর পরিবেশ রক্ষায় সম্মিলিত প্রয়াস আগামী প্রজন্মকে একটি নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী উপহার দিতে পারে।
তিনি স্বীকার করেন, মহৎ উদ্যোগের পথ সহজ নয়—সময়, অর্থ ও মানসিক চাপের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। তবে এর মধ্য দিয়েই ধৈর্য, সহনশীলতা ও নেতৃত্বের মতো গুণ অর্জিত হয়। তরুণরাই নতুন নীতি, যুগান্তকারী ধারণা ও সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হবে, আর তাদের সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশ একদিন উন্নত, মানবিক ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মাহবুব আলম।