বিক্রি হয়ে গেলো পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) ৭৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করেছে দেশটির সরকার। এই বিক্রির মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিমান পরিবহন খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এক প্রতিযোগিতামূলক নিলামে ১৩৫ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি, যা প্রায় ৪৮ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের সমান, দর দিয়ে পিআইএর মালিকানা অর্জন করে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আরিফ হাবিব ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ। এই লেনদেনকে পাকিস্তানের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বেসরকারিকরণ চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।
পিআইএ বিক্রির জন্য পাকিস্তান সরকার রেফারেন্স মূল্য নির্ধারণ করেছিল ১০০ বিলিয়ন রুপি। নিলামে তিনটি পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পুরো নিলাম অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
নিলাম শুরুর আগে টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, এটি দেশের ইতিহাসের অন্যতম বড় আর্থিক লেনদেন। তাই পুরো প্রক্রিয়াকে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দুই দফায় দরপত্র জমা দেওয়ার পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয় আরিফ হাবিব ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ। তারা পিআইএর প্রস্তাবিত ৭৫ শতাংশ শেয়ারের জন্য ১৩৫ বিলিয়ন রুপি দিতে সম্মত হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার সুযোগও থাকবে প্রতিষ্ঠানটির।
নিলামে আরিফ হাবিব গ্রুপের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল লাকি সিমেন্টের নেতৃত্বাধীন একটি কনসোর্টিয়াম, যারা ১৩৪ বিলিয়ন রুপি দর প্রস্তাব করে। অন্যদিকে বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ার ব্লু প্রস্তাব দেয় মাত্র ২৬.৫ বিলিয়ন রুপি। উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর পিআইএ বেসরকারিকরণের একটি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছিল।
১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস একসময় দেশটির জাতীয় গর্ব এবং দ্রুত অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল। বিশেষ করে ১৯৬০-এর দশকে ফরাসি ডিজাইনার পিয়েরে কার্ডিনের নকশা করা ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের ইউনিফর্ম এবং বিস্তৃত আন্তর্জাতিক রুট নেটওয়ার্কের কারণে সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পায়।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিক আর্থিক ক্ষতি ও একাধিক নিরাপত্তা ত্রুটির কারণে পিআইএর সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০২০ সালের জুনে করাচিতে একটি এয়ারবাস এ-৩২০ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার পর ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে পিআইএর ফ্লাইট নিষিদ্ধ করা হয়।
চলতি বছর ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে পিআইএর ফ্লাইট পুনরায় চালুর অনুমতি মিললেও যুক্তরাষ্ট্রে এখনও কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি সংস্থাটি। কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, পিআইএর মোট প্রায় ৩৪টি বিমানের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ১৮টি সক্রিয় রয়েছে।
