×

রাজশাহী

কানাইপুকুর

বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য

Icon

আখতারুজ্জামান তালুকদার, ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) থেকে

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪২ পিএম

বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য

ছবি : সংগৃহীত

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার একটি গ্রামের নাম কানাইপুকুর। এ গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে লাগানো সারি সারি গাছে আশ্রয় নিয়েছে বিরল প্রজাতির শামুকখোল পাখি; হয়ে উঠেছে পাখিদের অভয়ারণ্য। প্রায় দুই দশক ধরে এই গ্রামকেই যেন এ পরিযায়ী পাখিগুলো নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে। এ কারণেই উপজেলার কানাইপুকুর গ্রাম ‘পাখির গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

প্রতিদিন এসব পাখির কলতানে ঘুম ভাঙে গ্রামবাসীর। শুধু স্থানীয়রাই নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা পাখি দেখতে এ গ্রামে ছুটে আসেন।

জানা গেছে, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বসতবাড়ি ঘেঁষে প্রায় পাঁচ বিঘা পরিমাণ জায়গায় একটি বড় পুকুর। পুকুরের চারপাশে বট, নিম, তেঁতুল, আম ও বাঁশঝাড়সহ নানা গাছপালা রয়েছে। একসময় এসব গাছ রাতচরা ও সাদা বকের দখলে ছিল। এখন জায়গাটি পুরোপুরি দখলে নিয়েছে শামুকখোল পাখি। 

গাছের মগডালজুড়ে শত শত বাসা। শামুকখোলের পাশাপাশি বক, কানি বক, শঙ্খচোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল পাখিরও এখানে দেখা মেলে। স্থানীয়রা পাখিগুলোকে নিজেদের সন্তানের মতোই আগলে রাখেন বলে জানান।

জেলার সদর উপজেলা থেকে আসা দর্শনার্থী আসাদুজ্জামান রাশেদ বলেন, একসঙ্গে এতগুলো পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। হাজার হাজার পাখি দেখে মনটা ভরে গেল।

কালাই উপজেলা থেকে আগত দর্শনার্থী আবুল বাশার বলেন, শামুকখোল এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে এলাম। কাছ থেকে এত পাখি দেখে দারুণ লাগছে। সরকার যদি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়, তাহলে এটি এক অনন্য পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা তামিম আহম্মেদ জানান, প্রতি বছর এপ্রিলের দিকে পাখিগুলো আসে। গাছে গাছে বাসা বাঁধে, জুনে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা দেয়। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ওরা চলে যায়। পাখিগুলো চলে গেলে আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়।

পাখিকলোনির পৃষ্ঠপোষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে পাখিগুলো এখানে আসছে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত থাকে। কেউ তাদের বিরক্ত করে না, তাই এরা নিশ্চিন্তে থাকে। এটা আমাদের গ্রামের গর্ব।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, অতিথি পাখি কলোনিটি আমরা পরিদর্শন করেছি। কোনো পাখি অসুস্থ হলে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিতে আমরা প্রস্তুত।

শুভসংঘ ক্ষেতলাল উপজেলা সভাপতি এম রাসেল আহমেদ বলেন, ক্ষেতলালের কানাইপুকুর পাখি কলোনি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বসুন্ধরা শুভসংঘ সবসময় এমন উদ্যোগের পাশে থাকবে। পাখি বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে, মানুষও বাঁচবে। পাখিদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা মানেই নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আল জিনাত বলেন, কানাইপুকুর পাখি কলোনিটি এই উপজেলাকে এক আলাদা পরিচিত এনে দিয়েছে। ওই গ্রামের প্রতিটি মানুষ পাখিগুলোকে প্রতিবেশী হিসেবে আপন করে নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ওই পাখিদের নিরাপদ খাদ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করছে। গ্রামটিকে নিয়ে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

টেকনাফে ব্রিজের নিচে মিলল বিএনপি নেতার মরদেহ

টেকনাফে ব্রিজের নিচে মিলল বিএনপি নেতার মরদেহ

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে : সেনাসদর

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে : সেনাসদর

এনসিপি কিভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে, জানালেন নাহিদ ইসলাম

এনসিপি কিভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে, জানালেন নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে অংশ নেবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

নির্বাচনে অংশ নেবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App