×

সাহিত্য

নজরুল জয়ন্তী আজ

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ০৯:০২ এএম

নজরুল জয়ন্তী আজ

ছবি : সংগৃহীত

   

যার কাছে বাঙালির অশেষ ঋণ। যার প্রগতিশীল প্রণোদনায় বাঙালি প্রেম আর দ্রোহের ভাষা খুঁজে পেয়েছে, উদ্বুদ্ধ হয়েছে শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে, আজ বাংলা সাহিত্য জগতের প্রবাদপ্রতিম পুরুষ সেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী। রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো জন্মজয়ন্তীর এ আয়োজন নিঃসন্দেহে গৌরবময়। বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হবে প্রিয় কবিকে।

বড্ড পরাধীন সময়ে ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব ঘটেছিল নজরুলের। সেই কবেকার কথা! অথচ এই এখনো বিস্ময়কর আলো হয়ে পথ দেখিয়ে চলেছেন বাঙালিকে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ সারাদেশে উদযাপিত হবে জাতীয় কবির জন্মদিন। কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, পড়ালেখা শুরু করেন মক্তবে। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর দারিদ্র্যের কারণে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশি দূর এগোয়নি।

মাত্র ১০ বছর বয়সেই গোটা পরিবারের ভার কাঁধে নিতে হয় তাকে। জীবিকার প্রয়োজনে রুটির দোকানে কাজ নেন। মসজিদের মুয়াজ্জিন, মাজারের খাদেম হিসেবেও কাজ করেছেন। তরুণ বয়সে সেনা সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন যুদ্ধে। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। করেছেন রাজনীতি। সাহিত্য চর্চার শুরুটাও বালক বয়সে। লেটো দলে যোগ দিয়ে শুরু হয় তার সাহিত্যচর্চা। নজরুলের কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে বিপুল সমৃদ্ধি।

আরো পড়ুন : ঈদ যাত্রা : ট্রেনের ৪ জুনের টিকিট মিলছে আজ

কবি বিশেষ আলোড়ন তোলেন তার ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে। শোষকের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন— আমি ত্রাস সঞ্চারী ভুবনে সহসা সঞ্চারী ভূমিকম্প।/ ধরি বাসুকির ফণা জাপটি,/ ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা শাপটি!/ আমি দেব-শিশু, আমি চঞ্চল,/ আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্বমায়ের অঞ্চল। কাছাকাছি সময়ে রচিত তার আরেকটি বিখ্যাত কবিতা ‘কামাল পাশা’। এতে ভারতীয় মুসলিমদের খিলাফত আন্দোলনের অসারতা সম্বন্ধে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমকালীন আন্তর্জাতিক ইতিহাস-চেতনার পরিচয় পাওয়া যায়। তবে নজরুলের সৃষ্টির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে আছে সংগীত। বৈচিত্র্যময় বাংলা গানের সবচেয়ে বড় ভাণ্ডার তার। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গান রচনা করেন তিনি। সুরবৈচিত্র্যে ভরপুর এসব গান বাংলা সংগীতকে অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছে। তার সৃষ্ট রাগগুলোও মানুষের মনে দারুণ বিস্ময় জাগায়।

কাজী নজরুল ইসলাম নিজের সব সৃষ্টির মধ্য দিয়ে প্রেমের কথা বলেছেন। মানবতার কথা বলেছেন। সাম্যের কবি সমাজের নিচু শ্রেণির মানুষকেও কাছে টেনে নিয়েছেন। নারীর প্রতি উপেক্ষা মেনে নেননি। ধার্মিক মুসলিম সমাজ ও অবহেলিত জনগণের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক থাকলেও সাম্প্রদায়িকতার নিন্দা করেছেন তীব্র ভাষায়। স্বার্থান্ধ মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার ছিলেন কবি। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী কবি তৎকালীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কারণে অসংখ্যবার জেল খেটেছেন।

জেলে বসেই তিনি লিখেছেন বিখ্যাত ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’। ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এভাবেই দুর্দম গতিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন আজকের আমাদের নজরুল। গণমানুষের নজরুল। তবে জীবনের বড় অংশ জুড়ে ছিল নানা লাঞ্ছনা আর গঞ্জনা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪২ সালে অগ্রজ রবীন্দ্রনাথের ‘ট্র্যাজেডি’র আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করেন। এ বছর চির বিদ্রোহী রণক্লান্ত নজরুল বাকশক্তি ও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে শিশুর মতো হয়ে যান।

এ অবস্থায় ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত থেকে কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। নজরুলকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। কবির জীবনের শেষ দিনগুলো কাটে পিজি হাসপাতালে। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর এখানেই ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট পৃথিবীকে চিরবিদায় জানান তিনি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ৮ দলের বৈঠক

সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ৮ দলের বৈঠক

মোস্তাফিজ নিলেন ৩ উইকেট, ভাঙলেন সাকিবের রেকর্ড

মোস্তাফিজ নিলেন ৩ উইকেট, ভাঙলেন সাকিবের রেকর্ড

গাজায় গণহত্যা চলছেই, প্রাণহানি ছাড়াল ৫৩ হাজার ৯০০

গাজায় গণহত্যা চলছেই, প্রাণহানি ছাড়াল ৫৩ হাজার ৯০০

নজরুল জয়ন্তী আজ

নজরুল জয়ন্তী আজ

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App