গাজায় হামলা চালাতে গিয়ে ২ ইসরায়েলি সেনা নিহত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:১১ এএম

গাজায় নিহত সেনার সংখ্যা পৌঁছাল ৮৮২ জনে। ছবি : সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় অভিযান চালাতে গিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও তার মিত্র গোষ্ঠীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই ইসরায়েলি সেনা।
দখলদার বাহিনীর নিহত ওই দুই সেনার পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সার্জেন্ট আসাফ জামির (১৯) এবং সার্জেন্ট ইয়াইর এলিয়াহু (১৯)। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
আসাফ জামিরের বাড়ি ইসরায়েলের দিমোনা শহরে। তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫৩তম আরমোর্ড ব্যাটালিয়ানের সৈনিক ছিলেন।
শুক্রবার দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান চলাকালে ট্যাংক বিস্ফোরণে নিহত হন আসাফ। তার সঙ্গে আরো দুই সেনা আহত হয়েছেন।
আর ইয়াইর এলিয়াহু’র বাড়ি ইসরায়েলের এজের শহরে। তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাজা ডিভিশনের নর্দার্ন ব্রিগেডের একজন কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং সৈনিক ছিলেন। রকেটের আঘাতে ভারী সাঁজোয়া যান বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন তিনি।
এই দুজনের নিহতের মধ্যে দিয়ে গত প্রায় দু’ বছরে গাজায় নিহত সেনার সংখ্যা পৌঁছাল ৮৮২ জনে। গত ৩০ জুন ইসরায়েলি বেতার সংবাদমাধ্যম কান জানিয়েছিল, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৮৮০ জন ইসরায়েলি সেনা এবং আহত হয়েছেন আরো ৫ হাজার ৮৪৪ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা।
এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
আরো পড়ুন : গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া হামাসের
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৬ হাজার ৩৩১ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরো ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৩২ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।
কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত আড়াই মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৮ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরো ২০ হাজার ৫৯১ জন।
যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।