ফতুল্লায় ফেরিতে ট্রাকের ধাক্কায় নিখোঁজ ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩১ এএম
ছবি : সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীর মাঝখানে চলন্ত একটি ফেরিতে ট্রাকের ধাক্কায় পাঁচটি যানবাহন নদীতে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতেই নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও পাগলা কোস্টগার্ড যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন, প্রবাসী মাসুদ রানা, ভ্যানচালক স্বাধীন এবং মোটরসাইকেল আরোহী গার্মেন্টস শ্রমিক রফিক।
শনিবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ফতুল্লা ঘাট থেকে বক্তাবলী ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই দুজন নিখোঁজের খবর পাওয়া যায়। পরে জানা যায়, গার্মেন্টস শ্রমিক রফিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নদী থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রফিকের স্ত্রী পিংকি জানান, তার স্বামী ফতুল্লার ভোলাইল এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে দুই শিশু সন্তানসহ বক্তাবলীতে তার বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ধলেশ্বরী নদী পার হওয়ার সময় বক্তাবলী ফেরিতে একটি ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলসহ পিংকি ও তাদের দুই শিশু সন্তান ফেরির ভেতরে পড়ে যান, আর রফিক ট্রাকসহ নদীতে পড়ে যান। পরে ফেরিতে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে তিনি মারা যান।
নিহত প্রবাসী মাসুদ রানার মা পারভিন আক্তার জানান, মাসুদ রানা প্রায় ২৫ দিন আগে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছিলেন। দেশে ফিরে তিনি নারায়ণগঞ্জে ড্রাইভিং শেখা শুরু করেন। শনিবার রাত ৯টার দিকে ড্রাইভিং শেখা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঘাটে এসে স্ত্রীকে ফোন করে বলেন তিনি ফেরিতে উঠেছেন এবং বাসায় ফিরছেন। কিছুক্ষণ পর ফেরিতে দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এরপর মাসুদ রানার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে পরিবারের সদস্যরা নদীর তীরে এসে অপেক্ষা করেন। রাত আনুমানিক ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বক্তাবলী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক রকিবুজ্জামান জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে যানবাহন বোঝাই একটি ফেরি ফতুল্লা থেকে বক্তাবলী ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ফেরিটি নদীর মাঝখানে পৌঁছালে একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় এবং দুটি ইজিবাইক, একটি ভ্যানগাড়ি ও একটি মোটরসাইকেলসহ নদীতে পড়ে যায়।
তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার সময় ফেরিতে থাকা যাত্রীরা রফিক নামে একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। অপর দুইজন মাসুদ রানা ও স্বাধীন নিখোঁজ থাকলেও রাত দেড়টার দিকে নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নদীতে পড়ে যাওয়া যানবাহন উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
