অতিথি পাখি
মুখরিত মাগুরার ঘোপ বাঁওড়
মুরাদ হোসেন, মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:১১ পিএম
ছবি : ভোরের কাগজ
প্রতি বছরের মতো এবারো শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে দলবেঁধে আসা পাখির কলরব শুনতে পাচ্ছে মানুষ। এসব পাখির ডাকে রোজ ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। অতিথি পাখিদের উপস্থিতি প্রকৃতিতে এনেছে নতুন রূপ। তাদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
মনোমুগ্ধকর এই প্রাকৃতিক দৃশ্য মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের ঘোপ বাঁওড়ে। শীতের শুরুতেই বৈচিত্র্যময় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের যেন মেলা বসেছে এখানে। ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘোপ বাঁওড়ের বিশাল জলাশয়জুড়ে।
প্রতি বছর শীত মৌসুমের শুরুতেই ভিনদেশি এসব পাখির বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। পাখিদের কলতানে মুখরিত হয়ে ওঠে প্রকৃতি। চোখে পড়ে মন মাতানো এক অপরূপ দৃশ্য। এ যেন পাখিদের জন্য অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে ঘোপ বাঁওড়।
সরজমিন দেখা যায়, ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির ডানা মেলে উড়ে যাওয়া, পানিতে ডুব দিয়ে আহার শিকার করার মতো মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। তারা যেন দল বেঁধে নেমে পড়েছে খাদ্য সংগ্রহের প্রতিযোগিতায়। এভাবে খাদ্যের জন্য অভিযান, ছোটাছুটি আর লুটোপুটি চলে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। কখনো কখনো কচুরিপনার উপরে বসে বিশ্রাম নিতেও দেখা যায় পাখিদের।
আরো পড়ুন : সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে পঞ্চগড়
প্রকৃতির এই মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যের টানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ ছুটে আসেন বাঁওড়ের তীরে। তারা দূর থেকেই দুচোখ ভরে উপভোগ করেন পাখিদের কলরব, মিতালী আর মাতামাতি। এ অন্যরকম এক অনুভূতি।
তেমনই অনুভ‚তির কথা জানালেন মৎস্য শিকারি মুকুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে এই বাঁওড়ে মাছ শিকার করছি। বহু বছর ধরে এই বাঁওড়ে শীতের সময় অতিথি পাখির দেখা মেলে। আমরা সারাবছর এই অতিথি পাখির জন্য অপেক্ষা করি। তাদের মতো আমরাও সারাদিন বাঁওড়ে থাকি। পাখিদের সঙ্গে আমরা একপ্রকার মিলেমিশে বসবাস করি। অতিথি পাখির ঝাঁক বেঁধে বিচিত্র স্বরে ডাকতে ডাকতে উড়ে চলা, খাবার সংগ্রহ করা, কিচিরমিচির শব্দে বাঁওড়ের পানিতে নেমে আহার শিকারের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠা- এসব দৃশ্য আমাদের মুগ্ধ করে তোলে। শীতকালে বিভিন্ন দেশ থেকে আসে এসব অতিথি পাখি। শীত কমতে শুরু করলেই আবার ফিরে যায়।
