নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত দুদকের
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
নাঈমুল ইসলাম খান এবং তাঁর স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি। ছবি : সংগৃহীত
সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ও সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান এবং তাঁর স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, নাঈমুল দম্পতির বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় কমিশন মামলার অনুমোদন দিয়েছে। আজই মামলা দায়ের করা হতে পারে।
এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি নাঈমুল ইসলাম খান, তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এরপর তাঁদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক নোটিশ পাঠানো হয়।
দুদকে জমা দেওয়া আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানা যায়, নাঈমুল ইসলাম খান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে মোট ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা পড়ে এবং এর মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া পরিবারের চার সদস্যের নামে ১২টি ক্রেডিট কার্ডে প্রায় ২৮ লাখ টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
আরো পড়ুন : অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে সরকার প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ৯১টি, যেখানে ২৪৯ কোটি টাকা জমা হয় এবং ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। তাঁর স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে ১৩টি হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা এবং ১৩ কোটি টাকা উত্তোলনের তথ্য মিলেছে।
তাদের তিন মেয়ের ব্যাংক হিসাবেও উল্লেখযোগ্য অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। আদিবা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের হিসাবে ১ কোটি ২৫ লাখ, এবং যূলিকা নাইম খানের হিসাবে ৬১ লাখ টাকা জমা পড়েছে—যার বেশিরভাগই পরবর্তীতে উত্তোলন করা হয়।
এ ছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, যার প্রায় পুরো অর্থই তিনি তুলেছেন বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
২০২৪ সালের ৬ জুন শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান নাঈমুল ইসলাম খান। তবে একই বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
দুদক বলেছে, সম্পদের উৎস, আয় ও ব্যয়ের বৈধতা যাচাই না করে গোপন রাখার অভিযোগেই এই মামলা করা হচ্ছে। কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে বিবেচিত হবে।
